May 4, 2024, 5:20 pm

ডিজিটালে আসক্তি, মেধাশূণ্য প্রজন্ম তৈরির শঙ্কা

শৈশব থেকে ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্তি মেধাশূণ্য প্রজন্ম তৈরি করবে বলে সর্তক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আসক্তি কাটাতে প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রণয়নের পরামর্শ তাদের। আর অভিভাবকরা, স্কুলগুলোতে খেলার মাঠ বাধ্যতামূলকসহ মিউজিক ক্লাসের মতো ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় ডিজিটাল ডিটক্স পদ্ধতি, যার মাধ্যমে স্ক্রিন লক, ডিটক্স বুথ ক্যাম্পসহ নানা কৌশলে সীমিত করা হচ্ছে ডিভাইস ব্যবহার।
সন্ধ্যা ৭টা বাজলেই বেজে ওঠে সাইরেন। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ টেলিভিশন, মোবাইল, ল্যাপটপসহ সব ডিজিটাল ডিভাইস। ভারতের মহারাষ্ট্রের মোহিত্যাঞ্চে ভাদগাঁওয়ে দেড় ঘণ্টার জন্য কথোপকথন-আলাপচারিতায় ব্যস্ত শিশু-কিশোর-বৃদ্ধসহ সব বয়সীরা।
স্ক্রিন আসক্তি থেকে দূরে থাকা ও মানুষে মানুষে সংযোগ ফিরিয়ে আনার এই কৌশলের নাম ডিজিটাল ডিটক্স। শুধু মহারাষ্ট্র নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই কৌশলটি।
উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের আইপ্যাড, ল্যাপটপ বা মোবাইলে গেম খেলা ও ইউটিউব দেখার মতো আসক্তি থেকে দূরে রাখতে অনেক বাবা-মা-ই বেছে নিয়েছেন স্ক্রীন ও অ্যাপস লক পদ্ধতি। দিনে নির্দিষ্ট সময় কেবলমাত্র নির্ধারিত অ্যাপস ব্যবহার করতে পারবে শিশু-কিশোররা।
চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় চালু ডিটক্স ক্যাম্প। যেখানে কোনো ডিভাইস ছাড়া প্রকৃতির মাঝে ছেড়ে দেয়া হয় কিশোরদের। গেইমের ক্যারেক্টরের মতোই প্রশিক্ষণ নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী হয় তারা।
আর যুক্তরাজ্যে চালু রয়েছে অফ-গ্রিড কেবিন। ডিজিটাল জীবনকে কয়েকদিনের জন্য বাক্সে বন্দি করে প্রকৃতির মাঝে সময় কাটায়।
বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ এখনও নেই। অভিভাবকরা পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকা, মিউজিক ক্লাসসহ টুর্নামেন্ট আয়োজনের ওপর জোর দিয়েছেন।
অভিভাবক কাজী শবনম বলেন, “অ্যাকাডেমিক ক্লাসগুলো মাঝে মাঝে ব্রেক দিয়ে প্রতিসপ্তাহে ওদেরকে মিউজিক ক্লাস, আর্ট ক্লাস, গিটার ক্লাস স্কুল থেকেই করাচ্ছে। ওদের মাইন্ড পরিবর্তনের জন্য।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজনে আইন করে ১৬ বছরের নিচে সব শিশু-কিশোরকে স্মার্টফোন দেয়া বন্ধ করা উচিত। পাড়া-মহল্লায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শ তাদের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো শারিফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “১৬ বছরের আগে ২ ঘণ্টার বেশি কেউ যেন মোবাইল ব্যবহার না করে এই রকম একটা পরামর্শ সবার জন্য রাখতে চাই। প্রয়োজনে অস্বাভাবিক কোনো চ্যাটিং বা ফেসবুক-ইউটিউব ব্যবহার করলে এর জন্য একটা কন্ট্রোলিং অথরিটি থাকা উচিত।”
দু’বছরের মহামারির লকডাউন পুরো বিশ্বে সব বয়সীদের মধ্যে বাড়িয়েছে প্রযুক্তি-আসক্তি, কমেছে মানুষে-মানুষে বন্ধন। এ অবস্থায় মেধাবী ও সুস্থ আগামীর প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রযুক্তি ও মানবিক গুণাবলির মধ্যে ভারসাম্য খুবই জরুরি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :